প্রকাশিত: Tue, Apr 23, 2024 11:58 AM আপডেট: Sat, Dec 6, 2025 11:43 PM
আমরা ক্লাসগুলো ভোরবেলা শুরু করে সকাল ১০টার মধ্যে শেষ করতে পারতাম
ড. কামরুল হাসান মামুন ; সারাদেশে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে একটি ফরমান জারি করেছে যে অনির্দিষ্টকালের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে ক্লাস নিতে হবে। তাই প্রথম দিনে দেড় ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অনলাইনে ক্লাস নিলাম। করোনার সময় অনলাইনে ক্লাস নিয়েছি। ও যধঃব ড়হষরহব পষধংং! ক্লাস বা লেকচার মানে ইন্টারঅ্যাকশন, চোখ দেখাদেখি, চেহারা দেখাদেখি হয়। এসবের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের অভিব্যক্তি অনুধাবন করতে পারি। আমি যখন সশরীরে শ্রেণিকক্ষে ক্লাস নেই তখন আমি সবাইকে দেখি। চেহারা দেখে অনুভব করতে পারি ক্লাস বুঝতেছে কিনা এবং সেই অনুযায়ী আমি নিজেকে ক্যালিব্রেট করতে পারি। অনলাইনে সেই সুযোগ নেই। তাছাড়া ক্লাসতো কেবল শিক্ষার্থীদের ব্যাপার না, শিক্ষকদেরও ব্যাপার। অভিনেতাদের যদি জিজ্ঞেস করা হয় কোনটায় আনন্দ বেশি? সিনেমায় নাকি থিয়েটারে অভিনয় করে। তারা সব সময় বলে থিয়েটারে। কারণ থিয়েটারে রিঅ্যাকশনটা তাৎক্ষণিক। ক্লাসও তাই। সেখানে শিক্ষকেরও তৃপ্তির ব্যাপার আছে। একটা ক্লাস নিয়ে আনন্দ না পেলে পরবর্তী ক্লাস আরো ভালোভাবে নেওয়ার অনুপ্রেরণা সৃষ্টি হয়না। আমি সেই জন্যই অনলাইন ক্লাস পছন্দ করি না।
গরম কি কেবল এখন? আমি ছোটবেলাতেও দেখেছি গ্রামেও অনেক গরম পড়তো। তখন হাতে পাখা নিয়ে গাছের নিচে ওঠানে আঙিনায় গিয়ে পাটি বিছিয়ে শুয়ে থাকতাম। এপ্রিল, মে, জুন মাসে গরম পড়বেই। এজন্য সব বন্ধ করে দিলে চলবে না। হ্যাঁ ঢাকা শহরে যেই পরিমাণ গাছ কাটা হয়েছে আর যেই পরিমাণ এসি চলে তাতে এমনিতেই শহরের তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি বেড়ে যায়। ধনীদের আরামের ফসল গরিবের আরো বেশি কষ্ট। ছোটবেলায় আমি যেই গ্রামে বড় হয়েছি সেই গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়ির পেছনে একটা জঙ্গল ছিলো। সেই জঙ্গলে প্রচুর গাছ, পাখি, শেয়াল ও অন্যান্য প্রাণি থাকতো। এসব দেখেই বড় হয়েছি। এখন সেই একই গ্রামে গেলে চেনা যায় না। উন্নয়নের নামে সব জঙ্গল কেটে সেখানে ঘরবাড়ি হয়ে গেছে। এমনকি ফসলি জমিতেও ঘরবাড়ি। আর ওই দিকে মধুপুর, ভাওয়াল, সুন্দরবন, কক্সবাজারসহ সর্বত্র গাছ কাটার উৎসব চলছে।
এই পৃথিবীর মানুষের জনসংখ্যা বৃদ্ধিই সকল সমস্যার মূল কারণ। মানুষ বাড়ার কারণে আবাসিক প্রয়োজনে কৃষি জমি ও বন জঙ্গল কাটা হয়েছে। এতে প্রাণিদের বসবাসের জায়গা ছোট হয়ে আসছে। পুরো ইকো সিস্টেম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এক সময় জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের একটা পরিকল্পনা ছিলো এবং সেটা জোরেসোরে প্রচার করা হতো। সেই প্রোগ্রাম এখন প্রায় নেই বললেই চলে। মানুষ কমান, গড়া কাটা কমান, বন জঙ্গল কাটা বন্ধ করুন। ইমারত ইট সুরকি আর কংক্রিটের ভবন নির্মাণ মানে উন্নয়ন না। যাহোক কষ্ট হলেও আমি সশরীরে ক্লাসের পক্ষে। আমরা ক্লাসগুলো ভোরবেলা শুরু করে সকল ১০ টার মধ্যে শেষ করতে পারতাম। অর্থাৎ আমরা অফিস ও ক্লাসের সময় পরিবর্তন করতে পারতাম। আমাদের গ্রাম দেশে গরমকালে কৃষকরা ভোর রাতে উঠে কৃষি কাজ করে ১০ টার মধ্যে ফিরে আসতো আবার বিকালবেলা কাজ করতো। পুরো দুপুরবেলা বিশ্রাম নিতো। এভাবেই আমরা ম্যানেজ করতাম। সেখান থেকে আমাদের শেখা উচিত ছিলো।
লেখক: অধ্যাপক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
আরও সংবাদ
চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে
‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!
কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!
সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি
ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
মতিউর প্রতিদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮৩ ব্যাচের বন্ধুদের গ্রুপে সৎ জীবন যাপনের উপদেশ দিতেন!
চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে
‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!
কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!
সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি
ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট